একজন দরিদ্র স্কুলছাত্র ও প্রতিপক্ষ টাকার দুনিয়া
স্যার তখন বকা দিলেন, ফি যখন আনোনি তখন পরীক্ষা দিতে এসেছো কেনো? বেরোও হল থেকে, যাও।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম, মাথা নিচু রেখেই ও চলে যাচ্ছে, চোখের নিচে অশ্রু টলমল করছে ওর।
মহিম খুব দরিদ্র ছিলো। বাবা দিনমজুর। বইখাতা ঠিকমতো কিনতে পারতোনা। দুবেলা ঠিকমতো খেতে পারতোনা। কিন্তু অনেক ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট ছিলো মহিম। আর খুব ভালো একজন ছেলে ছিলো ও।
আমি পরীক্ষা শেষ করে ওর বাড়িতে গেলাম। বাড়িতে পেলাম না। বাড়ির পাশেই বিশাল নদী। নদী ঘেষে বিশাল খেলার মাঠ। আমি জানি মহিমকে এখন কোথায় পাওয়া যাবে। গেলাম। গিয়ে দেখি, ও নদীর গাঁ ঘেষে বসে আছে, চোখে তখনো অশ্রু টলোমলো, কাঁদছে ও। ভালো ছাত্র, টাকার অভাবে পরীক্ষা দিতে পারেনি বলে!
কিছুক্ষণ আগে পত্রিকায় দেখলাম, ফরিদপুরে নবম শ্রেণীর এক ছাত্রী রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে পারেনি। টাকার বড় অভাব তাদের। সব বান্ধবীরা ফি দিয়ে ফেলেছে। ও পারেনি। ফি দিতে না পাওয়ায় কোন্ টিচার যেনো কি বলেছে। লজ্জায়, ক্ষোভে বেচারি এই টাকার দুনিয়া থেকে চলে গেলো।
গলায় দড়ি ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেছে অভিমানী, দুঃখী মেয়েটা।
বন্ধু মহিমের কথা মনে পড়ছে খুব এখন।
© গালিব আফসারী।
Comments
Post a Comment